আজকাল অনেকেই ওজন কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু একই সময়ে, অনেকে আবার ওজন বাড়ানোর জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও কোনোভাবেই বাড়ানো যাচ্ছে না। আপনি যদি এই সমস্যায় পড়ে থাকেন তাহলে ব্লগটি আপনার জন্যই। ওজন বাড়ানো কঠিন কিছু নয় যদি আপনি কিছু প্রয়োজনীয় ডায়েট করার নীতিগুলিকে মেনে চলেন। কিছু নিয়ম মাফিক জীবনধারা আপনার শরীরের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক।
ঘরে বসে ৭ দিনে ওজন বাড়ানোর উপায়
এখানে টিপসের একটি তালিকা তৈরি করা হল যা আপনার স্বাস্থ্যের কোনো সমস্যা তৈরি না করে স্বাভাবিকভাবে এক সপ্তাহের মধ্যে ওজন বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। টিপসগুলো অনুসরণ করার চেষ্টা করুন, ফলাফল ৭ দিনের মধ্যে পেতে শুরু করবেন:
১. প্রচুর প্রোটিন খান: প্রোটিন আপনার পেশীগুলির বিল্ডিং ব্লক গঠন করে। শুধু চর্বির পরিবর্তে পেশীর ওজন বাড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন। আপনি যদি ওজন বাড়ানোর চেষ্টা করেন, তাহলে শরীরের ওজনের প্রতি পাউন্ডের জন্য ০.৭-১ গ্রাম প্রোটিন নেওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখুন (প্রতি কিলোগ্রামে ১.৫ – ২.২ গ্রাম প্রোটিন)। উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে মাংস, মাছ, ডিম, অনেক দুগ্ধজাত দ্রব্য, লেবু, বাদাম এবং অন্যান্য। আপনি যদি আপনার রেগুলার ডায়েটে পর্যাপ্ত প্রোটিন না পান তবে বিভিন্ন প্রোটিন সাপ্লিমেন্টগুলো আপনার জন্য কার্যকর হতে পারে।
২. বারবার খাবার খান: প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ বার খাবার খান এবং প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেট খাওয়া নিশ্চিত করুন।
৩. ওজন বাড়ানোর জন্য এনার্জি সমৃদ্ধ খাবার খানঃ প্রচুর এনার্জি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। খাবারে প্রচুর মশলা এবং মশলা জাতীয় উপাদান এবং সস যোগ করুন যাতে খাবারটি সুস্বাদু হয় এবং আপনি এটি আরও বেশি করে খেতে পারেন।
উচ্চ ক্যালরি যুক্ত কিছু খাবারঃ
বাদাম জাতীয়: বাদাম, আখরোট, ম্যাকাডামিয়া, চিনাবাদাম ইত্যাদি।
শুকনো ফল: কিশমিশ, খেজুর, ইত্যাদি।
উচ্চ-চর্বিযুক্ত দুধ: চর্বিযুক্ত দুধ, পূর্ণ-চর্বিযুক্ত দই, পনির, ক্রিম।
চর্বি এবং তেল: ভার্জিন জলপাই ওয়েল এবং অ্যাভোকাডো ওয়েল।
শস্য: গোটা শস্য যেমন ওটস এবং ব্রাউন রাইস।
মাংস: মুরগি, গরুর মাংস, ছাগলের মাংস, ভেড়ার মাংস, ইত্যাদি।
আলু জাতীয়: আলু, মিষ্টি আলু এবং ইয়াম।
ডার্ক চকোলেট, অ্যাভোকাডোস, পিনাট বাটার, গ্রানোলা, ট্রেইল মিক্স ইত্যাদি।
৪. শক্তি বর্ধক ব্যায়াম: ভারী ওজন তুলুন এবং আপনার শক্তি বাড়ান। এটি আপনাকে কেবল চর্বির পরিবর্তে পেশী বাড়াতে সহায়তা করবে।
৫. ঘুমানোর আগে স্ন্যাকস খান: যখনই পারেন অতিরিক্ত খাবার বা স্ন্যাক নিন, যেমন ঘুমানোর আগে। এতে আপনার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমা হবে।
৬. বড় প্লেটে খাবার খানঃ খাওয়ার সময় বড় প্লেট ব্যবহার করুন যদি আপনি আরও বেশি পরিমাণে ক্যালোরি পেতে চেষ্টা করেন এটি শরীরে পুষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধি করবে যা শরীরকে দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
৭. ভালো ঘুম: পেশী বৃদ্ধির জন্য ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব অনেক ক্ষেত্রে ওজন হারানোর কারণ হয়ে দাড়ায়। যদিও কিছু ক্ষেত্রে এটা ওজন বাড়াতে সাহায্য করে কিন্তু সেটা স্বাস্থ্য সম্মত নয়।
৮. মিক্স আইটেমের ক্ষেত্রেঃ আপনার প্লেটে বিভিন্ন খাবার থাকলে প্রথমে বেশি ক্যালোরি যুক্ত এবং প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার খান। শেষে সবজি জাতীয় খাবার খান।
৯. ধূমপান করবেন না: ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে সাধারণত ওজন হ্রাস পায়। তাই ধূমপানকে না বলুন। ধূমপান ত্যাগ করলে ওজন বাড়তে পারে।
১০. দুধ: প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালোরি সমৃদ্ধ দুধ এবং ওজন বৃদ্ধিকারী মিল্ক শেক পান করুন, এটি বাড়িতে বসেই পেশী বৃদ্ধি এবং ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
১১. খাবারের আগে বা খাবারের সাথে যথাসম্ভব কম পানি পান করবেন কারণ এটি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে পারে।
১২. ওজন বাড়ানোর জন্য সাপ্লিমেন্ট নিন: প্রাকৃতিকভাবে ওজন বাড়ানোর জন্য আপনি ক্রিয়েটিন মনোহাইড্রেটের মতো পরিপূরকগুলিও চেষ্টা করতে পারেন। এটি স্টেরয়েড জাতীয় কোনো উপাদান নয় এবং স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে আপনার আপনার পেশি বাড়াতে সাহায্য করবে। প্রতিদিন ৩-৫ গ্রাম খেতে পারেন। যাইহোক, পেশী স্টোরগুলিকে বাড়াতে করতে তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। ওজন বাড়ানোর জন্য কোনো সাপ্লিমেন্ট শুরু করার আগে একজন চিকিত্সকের সাথে পরামর্শ করে নিলে সবচেয়ে ভালো হয়।
উপরিউক্ত নিয়মগুলো মেনে চললে আশা করছি ৭ দিনের মধ্যেই আপনি ফলাফল পেতে শুরু করবেন এবং ১ মাসের মধ্যেই শরীরের ওজন অনেকখানি বাড়িয়ে ফেলতে পারবেন।
নিয়মিত স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন টিপস পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।